#1 – হাজী আব্দুল ওয়াহ্হাব সাহেব ২০১৬: মাওলানা সা’দের কি হতে পারে যে, তিনি এমন কথা বললেন?
নভেম্বর ২০১৬, রাইবেন্ড ইজতেমার সময় হাওয়েলী প্রধান হলে হাজী আব্দুল ওয়াহ্হাব সাহেব রহঃ নিম্নলিখিত বক্তব্য দেন (অডিও ক্লিপ নিচে)। মাওলানা সা’দ ছাড়া নিজামুদ্দিন থেকে একজন প্রতিনিধি তখন উপস্থিত ছিল। বাংলা অনুবাদ: “সবাই একজন চৌধুরী হয়ে গেছে (চৌধুরী হলো এমন একজন ব্যক্তির পরিচয় যিনি ধনী, তার অধীনে অনেক মানুষ আছেন এবং প্রত্যেককে তার পক্ষে থাকতে হয়। এর সেরা অনুবাদ হবেঃ একজন বড়/গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি)। নিজামুদ্দিনের লোকেরা ও ইউপির লোকেরা নিজামুদ্দিনে চৌধুরী হিসেবে থাকতে চায়। তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে থাকতে চায়। যে কেউ নিজে বড় হিসেবে থাকতে চায়, সে শেষ হবে। তাদের পরিবার (বংশ) শেষ হবে। (আল্লাহ) তাদের কাজ দেবেন যারা নিজেদের কিছুই মনে করেন না। যে কেউ (দাওয়াতের কাজে) বাধা হবে, সে বাদ হবে। আল্লাহ এটি করবেন। আল্লাহ এটি পরিষ্কার করবেন। আমি এটি পরিষ্কার বলছি। আপনাদের দাওয়াত সঠিক পথে দিতে হবে যখন আপনাদের বলা হয়। (এটি একটি অভ্যাস ছিল যে) ফজর নামাজের পরে মাওলানা ইলিয়াস সাহেব (রহঃ ) কিছু সময়ে দম পড়তেন (যা শরীর হেফাজত/সুস্থ রাখতে কিছু আয়াত বা অন্যান্য দুআ)। তিনি (প্রায়) প্রতিদিন (ফজর) নামাজের পরে এটি করতেন। তারপর তিনি সেখানে সকল লোকের সামনে (নিজামুদ্দিনে) পাঠানো চিঠিগুলো পড়তেন। তারপর তিনি সকলের মতামত নিতেন। সবাই তাদের মত দিতেন। উলামা, রাইবেন্ডের লোকেরা এবং সাহারানপুরের লোকেরা সবসময় পরামর্শ নিতো। হাফিজ (এখানে আওয়াজ স্পষ্ট নয়) বলেছেন এখানে আসুন পীর সাহেব (মাওলানা ইলিয়াসকে বোঝাচ্ছে)। পরবর্তী ধাপে আমাদের কি করা উচিত? তিনি বলেন যে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, নিজামুদ্দিনে এমন ও এমন করবে। মুফতি সাহেব এবং (অন্য কোনো নাম স্পষ্ট নয়) কিছু উত্তর দিতেন। অবশেষে এটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, মাদ্রাসাগুলোকে দাওয়াতে সম্পৃক্ত হতে এবং ছাত্রদের নিজামুদ্দিনে পাঠাতে হবে। মাদ্রাসাগুলো প্রথমে ছাত্রদের নিজামুদ্দিনে যাওয়ার খরচ বহন করবে। এরপর নিজামুদ্দিন দাওয়াতের জন্য ছাত্রদের খরচ বহন করবে। পরবর্তীতে প্রশ্ন উঠলো কে এই বিষয়টি প্রধান মুফতি সাহেবের (দেওবন্দের) কাছে উপস্থাপন করবে? কে হযরত সাহেবের সামনে (এই বিষয়টি) উপস্থাপন করবে? তাই সিদ্ধান্ত হলো ক্বারী তইয়্যব সাহেব যিনি মাওলানা ক্বাসিম নানুতুবী সাহেব এর নাতি এবং হাফিজ আহমদ সাহেব এর পুত্র এই বিষয়ে দেওবন্দে উপস্থাপন করবে। হাফিজ আহমদ এর সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠিত ছিল। (হাজী সাহেব এখানে ভিন্ন একটি বিষয়ে চলে যান) মাদরাসার লোকেরা তাদের নিজস্ব তাবলীগের কাজ করত। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন (তাবলীগ) জামাতের লোকেরা আসেনা? (একজন নামকরা) মুহাম্মাদ বলেছিল যে, নিজামুদ্দিন তা সামলাতে পারছে না (এটি মানে যে নিজামুদ্দিন জামাতগুলো মাদরাসায় পাঠাতে পারছিল না)। আমি যা বলতে চাই তা হলো যারা এই কাজগুলো করতে পারে তাদেরকে নিজামুদ্দিনে নিয়ে আসুন। এই বিষয়টি নিজামুদ্দিনের নয়। এটি একটি ব্যক্তির বিষয়ে, যিনি নিজামুদ্দিনে চৌধুরী হতে চান। এই পৃথিবীতে কেউ মহান নয়, কেবল আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া সবকিছু অস্তিত্বহীন হয়ে যাবে। এমন একজন ব্যক্তি বলে যে, আমি এত জন! এমন একজন ব্যক্তি বলে যে, আমার উপর বিশ্বাস রাখুন! আমি একজন বড় ব্যক্তি! আমি ভেবেছিলাম যে প্রকৃতপক্ষে তার কি হতে পারে যে (আল্লাহ তাআলা তাকে) এমন কথা বলাতে বাধ্য করেছেন। (আমি ভয় পাই যে) এ কারণে (কান্ধলবির) পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে (মাওলানা ইলিয়াসের বংশের বরকত নির্দেশ করছে)। দিল্লি থেকে যারা আসেন তারা, বসতি নিজামুদ্দিন, অন্যদের সেবা করতে শিখুন! (পরবর্তী বাক্যটি অস্পষ্ট। এটি কিছুটা নির্দেশ করছে যে, হাজী সাহেব অভিযোগ করছেন আজকাল কিছু লোক কেবল ছুটির মতো জামাতে যায়। তাদের অন্যদের সেবা করার ইচ্ছা নেই) (লোভী) ব্যবসায়ীদের স্বভাব হলো সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া। এটি আমাদের বর্তমান জটিলতা। আল্লাহ আমাদের পথনির্দেশনা করুন। তারা পার্টি বানাচ্ছে এবং লোকদের নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করছে। আমাদের শুধু আল্লাহর সাথে যুক্ত হওয়া উচিত! (ভিন্ন একটি বিষয়ে বলছেন) এই আফ্রিকার লোকেরা একটি জামাত নিয়ে এসেছে, প্রতিটি গ্রামে জামাত আনতে হবে।“#2 – হাজী আব্দুল ওয়াহাব সাহেব ২০১৬: মাওলানা সাদকে বড় বড় কথা বলা বন্ধ করতে হবে এবং বাইয়াত নেওয়া বন্ধ করতে হবে
নভেম্বর ২০১৬, রাইবেন্ড ইজতেমার সময় হাওয়েলী বিল্ডিং এ, হাজী আব্দুল ওয়াহাব সাহেব তাবলীগের পুরানো জিম্মাদার সাথীদের সামনে নিম্নলিখিত বক্তব্য দেন: নিজামুদ্দিনের একটি প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিল। তবে মাওলানা সাদ উপস্থিত ছিলেন না। বাংলা অনুবাদ: “কোনও আমিরাত কাজ করবেনা। যা ঠিক হয়েছে তাই ঘটবে ( ১৯৯৫ সালের চুক্তি উল্লেখ করে)। গতকাল নিজামুদ্দিনের লোকেরা এসেছিল এবং আমি তাদের সাথে কথা বলেছিলাম। যদি মাওলানা সা’দের আকাঙ্ক্ষায় এই বিষয়টি থাকে “আমি আমির”, “আমি একজন”, এবং সবাই তার প্রতি বায়াত করে, তাও কোনও গাড়ি চলবে না (এটি একটি রূপক, যা বোঝাচ্ছে যে, এটি কাজ করবেনা)। যা ঠিক হয়েছে তাই ঘটবে। আমি নিজামুদ্দিনের লোকদের বলেছি: শুরার সদস্যরা আমার কাছে এসেছে এবং তাদের সাথে আলোচনা করার পর আমি তাদের সাথে একমত। এর অনেক আগের কথা, যখন বিভিন্ন দেশের থেকে বিঘ্ন ঘটছিল, মাওলানা ইউসুফ রহঃ আমাকে বলেছিলেন, আমার শুরার সদস্যরা এখানে নেই, কিছু মক্কায় এবং কিছু পাকিস্তানে। সিদ্ধান্ত তখনই নেওয়া হবে যখন সবাই একত্রিত হবে। আমরা মাওলানা ইনামুল হাসান রহঃ এর মৃত্যুর পর একটি মাশওয়ারা অনুষ্ঠানে বসেছিলাম। মাওলানা সা’দ বলেছিলেন যে, যদি আমাকে আমির নিযুক্ত করা হয়, তবে যারা মাওলানা জুবায়ের রহঃ কে চান তারা নিজেদের (এই মেহনত থেকে) বিচ্ছিন্ন করে নিবেন। যদি মাওলানা জুবায়ের আমির হন, তবে যারা আমাকে চান তারা নিজেদের (এই মেহনত থেকে) বিচ্ছিন্ন করে নিবেন। অতএব এই উদ্যোগটি মাশওয়ারার দ্বারা চালানো উচিত এবং সেখান থেকে বাইয়াত সংঘটিত হবে না। এই বিষয়টিতে সবাই সম্মত হয়েছে। আপনি কি বুঝতে পারছেন? নিজেকে বড় মানুষ হিসেবে কাজ করা বন্ধ করুন এবং বাইয়াত নেওয়া বন্ধ করুন। তিনি (হাজী আব্দুল ওয়াহ্হাব) তাদের বলেছিলেন “আপনারা সকলেরই (নিজামুদ্দিনের সাথীরা) উচিত (ফিরে) নিজামুদ্দীনে চলে যাওয়া এবং সেখানে আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করা এবং যখন সেখানে পৌঁছাবেন, তখন যা কিছু মাশওয়ারার দ্বারা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী চলুন। এবং দোয়া করতে থাকুন- হে আল্লাহ, সমস্ত মানবতাকে সামনে রেখে, যা কিছু আমাকে করতে হয়, তা আমার হৃদয়ে ঢুকিয়ে দিন!”#3 – হাজি আব্দুল ওয়াহ্হাব সাহেবের চিঠি ২০১৬ সাল, মাওলানা সা’দকে শুরার অধীনে কাজ করতে আহবান
২৪ রবিউল আওয়াল ১৪৩৭ (৪ জানুয়ারী ২০১৬) বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম প্রিয় মাওলানা সা’দ, মাওলানা ইয়াকুব, মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা, মাওলানা আহমদ লাট এবং মাওলানা জুহায়রুল হাসান। আসসালামু আলায়কুম ওয়া রহমাতুল্লহ আমার আশা এই চিঠিটি আপনাকে আল্লাহর কৃপায় সুস্থতা অবস্থায় পাবে। আমি ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখের আপনার স্ক্যান করা চিঠিটি পেয়েছি। আপনি নয়া শূরা গঠনের উল্লেখ করেছেন যা নিজামুদ্দীন এ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আপনার সৎ মানসিকতার জন্য আপনাকে পুরস্কৃত করুন। চিঠিতে আপনি ভারতের জন্য কিছু সাথী নিয়োগ করেছেন। আমি উল্লেখ করতে চাই যে, মাওলানা আব্দুল সাত্তার কাজের পরিবেশে খুব পরিচিত ব্যক্তি নন এবং মাওলানা ইউসুফ(মাওলানা সাদের ছেলে) এখনও খুব তরুণ এবং তার কাজের প্রাথমিক পর্যায়ে আছেন। এই দুজনের জন্য এই কাজের বিশাল দায়িত্ব এখনই হৃদয়স্থ করা কঠিন হবে। এই কারণে, তাদের নিয়মিত কর্মী হিসেবে রাখা উচিত। আমি আপনাকে আরও পরামর্শ দিচ্ছি যে, তিনটি দেশের তেরো আন্তর্জাতিক (ওয়াল্ড ) শূরার পাঁচজন সদস্যরা (গত বছর) রাইবেন্ড ইজতিমা তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই পাঁচজন নিজামুদ্দীন এর সদস্যদের উচিত পালাক্রমে নিজামুদ্দীন সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে ফয়সাল (সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী) হিসেবে কাজ করা। এইভাবে কাজ করলে, ইনশাআল্লাহ, এটি কর্মীদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসা ও ঐক্যের উৎপত্তি করবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের সবাইকে কবুল করুন এবং আমাদের তার ইচ্ছার অনুযায়ী কাজ করতে তাওফীক দান করুন। আমীন। দোয়া ও সালাম। আব্দুল ওয়াহ্হাব।#4 – হাজি আব্দুল ওয়াহ্হাব সাহেবের চিঠি ২০১৬ শূরাকে প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নিশ্চিতকরণ
৬ সফর ১৪৩৮ (৭ নভেম্বর ২০১৬) আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ, প্রিয় মাওলানা সা’দ, আল্লাহ তা’আলার বরকতে, আমরা আশা করি আপনি সুস্থ অবস্থায় আছেন। গতকাল, ৬ নভেম্বর ২০১৬, মাগরিবের পরে, (আমি) হাজি আব্দুল ওয়াহাব প্রতিটি দেশের দায়িত্বশীল ভাইদের সভায় বক্তব্য রেখেছি। নিজামুদ্দীন সম্পর্কিত কর্মীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল।-
- নিজামুদ্দীন এ ( ১৯৯৫) মাশওয়ারা ) যা মাওলানা ইনামুল হাসান রহঃ এর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত হয়, তাতে সবাই সম্মত হয়েছিল যে, এই কাজটি হাজরতজির সম্পূর্ণ শূরার মাধ্যমে মাশওয়ারার মাধ্যমে পরিচালিত হবে। নিজামুদ্দীন এ কোন আমির থাকবে না এবং না থাকবে কোন বাই’আত।
- গত বছর নভেম্বর ২০১৫ এ পূর্ববর্তী ইজতিমার অনুষ্ঠানে, আমি ভাইদের মাশওয়ারার মাধ্যমে শূরাটির সম্পূর্ণতা নিশ্চিত করি এবং “আল্লাহুম্মা ইখতার লি ওয়াখতার” ১০১ বার পাঠ করার পর সই করি।
- নতুন নিয়মগুলি শুধুমাত্র পুরো শূরার সম্মতিতে কাজের মধ্যে পরিচয় করানো হবে।
- মাওলানা ইউসুফ রহঃ এর সময়ে, যখন বিভিন্ন দেশের ভাইরা তাদের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। মাওলানা ইউসুফ বলতেন, “আমাদের কিছু মাশওয়ারার ভাই মক্কায়, কিছু মদিনায় এবং কিছু পাকিস্তানে আছেন। আমাদের এই পয়েন্টগুলো নিয়ে আলোচনা করা উচিত যখন আমরা সবাই একত্রিত হব”
-
- হাজি আব্দুল ওয়াহাব
- মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা
- মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াকুব
- মাওলানা আহমদ লাট
- মাওলানা নজরুর রহমান
- মাওলানা আব্দুর রহমান
- মাওলানা উবায়দুল্লাহ খুরশিদ
- মাওলানা জুহায়রুল হাসান
- মাওলানা জিয়া উল হক
স्रोत: পত্র ২৩,Majmoo’a Khutoot